হাওজা নিউজ এজেন্সি: পরহেজগারীর বিভিন্ন স্তর রয়েছে: গুনাহ থেকে দূরে থাকা, সন্দেহজনক কাজ থেকে দূরে থাকা এবং এমন জিনিস থেকে দূরে থাকা যা সন্দেহের দিকে নিয়ে যায়, এমনকি সর্বোচ্চ স্তরে আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছু থেকে দূরে থাকা।
প্রশ্ন: রমজান মাসের সর্বোত্তম আমল কী?
সংক্ষিপ্ত উত্তর:
হযরত আলী (আ.) নবী করিম (সা.)-কে মাহে রমজানের সর্বোত্তম আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে নবীজি (সা.) উত্তরে বলেন, “মাহে রমজানের সর্বোত্তম আমল হলো আল্লাহর হারাম বা নিষিদ্ধ কাজগুলি থেকে দূরে থাকা।”
পরহেজগারীর বিভিন্ন স্তর রয়েছে: প্রথম স্তর হলো তওবাকারীদের পরহেজগারী, অর্থাৎ গুনাহ থেকে দূরে থাকা। এর চেয়ে উচ্চতর স্তর হলো সৎকর্মশীলদের পরহেজগারী, যারা সন্দেহজনক কাজ থেকেও দূরে থাকে। আরও উচ্চতর স্তর হলো মুত্তাকীদের পরহেজগারী, যারা নিষিদ্ধ ও সন্দেহজনক কাজ থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি এমন জিনিস থেকেও দূরে থাকে যা সন্দেহের দিকে নিয়ে যায়। সর্বোচ্চ স্তর হলো সিদ্দিকীনদের পরহেজগারী, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছু থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।
বিস্তারিত উত্তর:
মাহে রমজানের সর্বোত্তম আমল কী? এই প্রশ্নের উত্তরে হযরত আলী (আ.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ”হে আল্লাহর রাসূল! এই মাসের সর্বোত্তম আমল কী?” তিনি উত্তরে বললেন, “এই মাসের সর্বোত্তম আমল হলো আল্লাহর হারাম তথা নিষিদ্ধ কাজগুলি থেকে দূরে থাকা।”
পরহেজগারীর বিভিন্ন স্তর রয়েছে: প্রথম স্তর হলো তওবাকারীদের পরহেজগারী, অর্থাৎ গুনাহ থেকে দূরে থাকা এবং তওবা করা। এর চেয়ে উচ্চতর স্তর হলো সৎকর্মশীলদের পরহেজগারী, যারা সন্দেহজনক কাজ থেকেও দূরে থাকে। নবী করিম (সা.) বলেন, “যে জিনিস তোমাকে সন্দেহে ফেলে, তা ছেড়ে দাও এবং যে জিনিসে কোনো সন্দেহ নেই, তা গ্রহণ করো।” অর্থাৎ, সন্দেহজনক খাবার বা কথাবার্তা, যদিও তা বাহ্যিকভাবে হালাল বলে মনে হয়, কিন্তু যদি এর হালাল হওয়া নিয়ে সন্দেহ থাকে, তবে তা পরিত্যাগ করা উচিত। এটি সৎকর্মশীলদের পরহেজগারী।
এর চেয়ে উচ্চতর স্তর হলো মুত্তাকীদের পরহেজগারী, যারা নিষিদ্ধ ও সন্দেহজনক কাজ থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি এমন জিনিস থেকেও দূরে থাকে যা সন্দেহের দিকে নিয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, কখনও কখনও মানুষ অন্যের সম্পর্কে কথা বলে, কিন্তু ধীরে ধীরে তা কারও সম্মানহানির দিকে বা গিবতের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এ ধরনের কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত। আর্থিক বিষয়েও কখনও কখনও সন্দেহজনক সম্পদে হাত পড়তে পারে, সেগুলি থেকেও দূরে থাকা উচিত। এটি মুত্তাকীদের পরহেজগারী।
সর্বোচ্চ স্তর হলো সিদ্দিকীনদের পরহেজগারী, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছু থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। তাদের হৃদয়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর স্থান নেই। আল্লাহ তাআলা বলেন, “আল্লাহ কোনো মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি।” [সূরা আহযাব, আয়াত ৪] আমাদেরও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা উচিত যে, আমাদের হৃদয়ে আল্লাহর ভালোবাসা ছাড়া অন্য কিছু প্রবেশ না করে। এটি সিদ্দিকীনদের প্রশিক্ষণ, যেখানে হৃদয় আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছু থেকে মুক্ত।
তথ্যসূত্র:
১. আল-আমালী, ইবনে বাবুইয়াহ, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, কিতাবচি, তেহরান, ১৩৭৬ হিজরি, ষষ্ঠ সংস্করণ, পৃ. ৯৫।
২. কানজুল ফাওয়াইদ, কারাজকি, মুহাম্মাদ ইবনে আলী, মুহাক্কিক/মুহাক্কিক: নিয়ামত, আবদুল্লাহ, দারুল জাখাইর, কুম, ১৪১০ হিজরি, প্রথম সংস্করণ, খণ্ড ১, পৃ. ৩৫১।
৩. সূরা আহযাব, আয়াত ৪।
৪. দোয়া কুমাইলের একটি অংশ।
৫. হিকমাতুল ইবাদাত, জাওয়াদি আমলি, আবদুল্লাহ, মুহাক্কিক: শাফিঈ, হুসাইন, মারকাজ নাশর আসরা, কুম, ১৩৮৮ হিজরি, পঞ্চদশ সংস্করণ, পৃ. ১৬৫।
সূত্র: আইনে রহমত - আয়াতুল্লাহিল উজমা মাকারেম শিরাজির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
আপনার কমেন্ট